অভিযানের উত্তেজনায় রাতে ভালো

অভিযানের উত্তেজনায় রাতে ভালো , ঘুম হয়নি। যাইহোক, অ্যালার্ম বেজে যাওয়ার সাথে সাথে ওমকে কম্বল ছেড়ে যেতে হয়েছিল। আলো জ্বলার

আগেই হাতিছড়াপাড়া থেকে বের হতে হলো। ভবটুকু, যে সবেমাত্র ঘুমাতে শুরু করেছিল, ঠান্ডায় অদৃশ্য হয়ে গেল। বাইরে তখনও কৃষ্ণপক্ষের জমাট

অন্ধকার। কুয়াশা তার রহস্যের আবরণে পুরো পাহাড়কে ঢেকে দিয়েছে। পাহাড় জুড়ে নীরবতা। সহ-অভিযাত্রী ইমরান খান এবং স্থানীয় গাইড কৃষ্ণা

ত্রিপুরার পথে ছুটতে শুরু করেন। কুয়াশা ভেদ করে ইমরানের হেডল্যাম্পের আলো ক্ষীণ অগ্নিকুণ্ডের মতো পাহাড়ি পথে এগোচ্ছে। আমি সেই

আলোকে বিভোর হয়ে অনুসরণ করছি। সব চুপচাপ খাওয়ার পর পাশের বন থেকে একটা মায়া হরিণ জোরে ডাক দিল। হঠাৎ বিকট শব্দে আমি

অভিভূত হয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পর আমি স্থান-কাল নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়িউচ্চতা পরিমাপ করার জন্য একটি অভিযানের সময় একটি দুর্গম

পাহাড়েএকটি উচ্চতা অভিযানের সময় একটি দুর্গম দেশের ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় ১৬টি পাহাড়ের ভৌত উচ্চতা পরিমাপের জন্য এক দশকেরও বেশি

অভিযানের উত্তেজনায় রাতে ভালো

আগে যে অভিযান শুরু করেছিলাম তা সম্ভবত আজ শেষ হতে চলেছে। রাঙামাটির বিলাইছড়ির প্রত্যন্ত এলাকায় ১৭ নম্বর পাহাড়ে উঠতে যাচ্ছি আমরা। হাতে জিপিএস ডিভাইস নিয়ে ছুটছি গন্তব্যের দিকে। একসময় আলো জ্বলে উঠল। দিনের আলোয় কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ও আমার নজর কেড়েছে।এই দশকব্যাপী অভিযানে প্রতিটি পদকে কত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে—রৌদ্র, ঝড়, বৃষ্টির সবচেয়ে তীব্র রূপ দেখা; হরকাবনে পৈশাচিক রিমেক পার হওয়ার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা; ভাদ্রের প্রচন্ড গরমে পাহাড়ে বসে এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার; গভীর অরণ্যে হারিয়ে যাওয়া; দুই দিন ধরে বন্য গিরিখাত আটকে আছে; হাইপোথার্মিয়ার ভয়ে বৃষ্টিতে ভিজে বাঁশ দিয়ে সারারাত আগুন জ্বালিয়ে রাখা…।নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বান্দরবান গিয়েছিলাম। যে পাহাড়ে আটকা পড়েছিলাম, মনে হচ্ছিল দিন দিন বড় হচ্ছে। একসময় বাংলাদেশের পাহাড় নিয়ে কারবার

ফেসবুকে  নামে একটা গ্রুপ

ফেসবুকে  নামে একটা গ্রুপ পেলাম। বাংলাট্রেকে বাংলাদেশের কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গের একটি অসমাপ্ত তালিকা দেখে মাথায় চিন্তা এল, এই তালিকাটি যেভাবেই হোক শেষ করা উচিত। তখন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসিতে অনার্স করছিলাম।রাতের পর রাত গুগল আর্থ, সোভিয়েত টোপো মানচিত্র, সিআইএ প্রদত্ত মানচিত্র, ব্রিটিশ আমলে পরিচালিত গ্রেট টিগোনোমেট্রিক সার্ভের মানচিত্র এবং নাসার উপগ্রহ থেকে এসটিএম ডেটা অনুসন্ধান করা হয়েছিল। অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছি। এক সময় কাগজে-কলমে বাংলাদেশে তিন হাজার ফুট বা তার বেশি জায়গা চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল। এরই মধ্যে ফেসবুক ভিত্তিক ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ এবং ডি-ওয়ে এক্সপিডিটরসও চালু হয়েছে। তখন আমার মতো তারাও দেশের পাহাড়ে নতুন নতুন জায়গা খোঁজার জন্য আলাদা অভিযান চালাচ্ছিল।

আরো পড়ুন 

About admin